মহাবিশ্বে পৃথিবীর অবস্থান
যেহেতু বিশ্বাস করা হয় মহাবিশ্বের কোন কেন্দ্র অথবা প্রান্ত নেই, সেহেতু মহাবিশ্বে পৃথিবীর অবস্থান সামগ্রিকভাবে চিহ্নিত করার জন্যেও নির্দিষ্ট কোন মুলবিন্দু নেই। বিভিন্ন স্কেলে নির্দিষ্ট কিছু কাঠামোকে রেফারেন্স ধরে পৃথিবীর অবস্থান দেখান যায়ঃ
পৃথিবী → সৌরজগত → নক্ষত্রমণ্ডলীয় মেঘ → আকাশগঙ্গা ছায়াপথ →
গ্যালাক্টিক জোট → কন্যারাশি সুপারক্লাস্টার → মীনরাশি-তিমিমন্ডল
সুপারক্লাস্টার কমপ্লেক্স → দৃশ্যমান মহাবিশ্ব → মহাবিশ্ব
পৃথিবী (Earth) - ব্যাস ১২,৭০০ কিলোমিটার – সৌরজগতের তৃতীয় গ্রহ। এটি সূর্যের চারপাশে ২৯.৮ কিলোমিটার/সেকেন্ড বেগে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরছে।
সৌরজগত (Solar System) – আড়াআড়িভাবে ৪ আলোকবর্ষ(১
আলোকবর্ষ = ৯.৫ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার) - আমাদের নিজস্ব গ্রহমণ্ডল। সূর্য,
আটটি গ্রহ(বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন) এবং
তাদের উপগ্রহ নিয়ে গঠিত। এছাড়াও আরো কিছু ছোট ছোট গ্রহাণু আছে, যেমন মঙ্গল
ও বৃহস্পতির মাঝে অ্যাস্টরয়েড বেল্ট(গ্রহাণুপুঞ্জ) এবং নেপচুনের কক্ষপথের
বাইরে কাইপার বেল্ট(এর মধ্যে Ceres, Pluto, Haumea, Makemake ও Eris
উল্লেখযোগ্য)। এই এলাকার বাইরে সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ আশেপাশের নক্ষত্রের
আকর্ষনের কাছে পরাস্ত হয়
নক্ষত্রমণ্ডলীয় মেঘ (Local Interstellar Cloud) -
আড়াআড়িভাবে ৩০ আলোকবর্ষ - নক্ষত্রমণ্ডলীয় গ্যাসের মেঘ যার মধ্য দিয়ে সূর্য
ও আরো কিছু নক্ষত্র(Alpha Centauri, Altair, Vega, Fomalhaut ও Arcturus)
বর্তমানে পরিভ্রমনশীল।
আকাশগঙ্গা ছায়াপথ (Milky Way Galaxy) - আড়াআড়িভাবে
১,০০,০০০ আলোকবর্ষ - আমাদের নিজস্ব ছায়াপথ, ২০০ বিলিয়ন থেকে ৪০০ বিলিয়ন
নক্ষত্রের সমন্বয়ে গঠিত। এটি একটি সর্পিলাকার ছায়াপথ। রাতের বেলা পরিষ্কার
আকাশের এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে বিস্তৃত হালকা সাদা মেঘের সমষ্টির মত
দেখায়।
গ্যালাক্টিক জোট (Local Galactic Group) - আড়াআড়িভাবে ৩
মেগাপারসেক(১ মেগাপারসেক = ১ মিলিয়ন পারসেক = ৩.২৬ মিলিয়ন আলোকবর্ষ) -
অন্তত ৪৭টি ছায়াপথের জোট। প্রধানত এন্ড্রোমিডা(সর্ববৃহৎ), আকাশগঙ্গা ও
ট্রায়াঙ্গুলাম; বাদবাকি ছোট বামন ছায়াপথ। এর মহাকর্ষীয় কেন্দ্র এন্ড্রোমিডা
ও আকাশগঙ্গার মাঝামাঝি কোথাও অবস্থিত।
যেসব নক্ষত্র থেকে আলো এসে আমাদের পৃথিবীতে পৌঁছায় আমরা শুধু সেগুলোই দেখতে পাই। দৃশ্যমান মহাবিশ্বের বাইরে আরও অনেক অদৃশ্য এলাকা রয়েছে যেখান থেকে কোন আলো এসে এখনও পৃথিবীতে পৌঁছেনি। সেসব এলাকা সম্পর্কে কোন প্রকার তথ্য জানা যায়নি, কারন আলোই তথ্য পাওয়ার সবচেয়ে দ্রুততম মাধ্যম। তবুও এটাই ধারনা করা যায় যে মহাবিশ্বে আরও অনেক অনেক ছায়াপথ রয়েছে।
THE END
CREDIT BY : Biggan Bangla
0 মন্তব্যসমূহ