মনোবিজ্ঞানঃ পার্টঃ ০৩

মনোবিজ্ঞানঃ নিজের সম্পর্কে আমরা কতটা জানি! 

পার্টঃ ০৩ 


দ্বিতীয় পর্বের পর থেকে: 
  • আমরা ক্ষমতা পেলেই তার অপব্যবহার করি! 

ক্ষমতা থাকলে সে ক্ষমতার অপব্যবহার করা আমাদের একটা মানসিক ব্যাধি। মোটামুটিভাবে আমরা জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পছন্দ করি কিংবা করতে ভালোবাসি। এটার পেছনে একটি সাইকোলজিক্যাল কিংবা মনস্তাত্বিক ব্যাখ্যা ও রয়েছে। ২০০৩ সালের এক গবেষণায় প্রকাশিত এক জার্না্লের রিভিয়্যু লেখার জন্য তিনজন ছাত্রকে পাঠানো হয়েছিলো।  কাগজপত্র লেখার জন্য দুই ছাত্রকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অন্যজনকে কাগজটির মূল্যায়ন করতে এবং প্রতিটি ছাত্রকে কতটা অর্থ প্রদান করা হবে তা নির্ধারণ করতে বলা হয়েছিল।

তাদের কাজের মাঝখানে গবেষক একটি প্লেটে করে ৫ টি কুকি(এক ধরণের খাবার) রেখে গেল। সাধারণভাবেই  শেষ কুকিটা  কখনও খাওয়া হয় না (কারণ ওরা সব মিলে চারজন ছিলো)। তবুও তাদের মধ্যে যে লিডার, সে প্রায় সবসময় চতুর্থ কুকি খেয়ে থাকেন এবং শেষের কুকিটাও তার ভাগ্যেই থাকে। ব্যাপারটা অনেকটা মানসিকভাবেই সবাই মেনে নেয় যে যিনি লিড দিবেন তিনিই বেশি ভাগ পাবেন। আবার লিডারও তাদের মনের মধ্যে এই ধারণা পুষে রাখেন। সমাজের প্রায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে এই উদ্ভট ধারণা বিদ্যমান।

We get easily corrupted by Power.

বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী  Dacher Keltner বলেন,
" বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় অনেক গবেষক অনেক জনবলকে কাজে লাগান এবং বিভিন্ন ভাবে তাদের উপর প্রভাব খাটাতে পছন্দ করেন। তাদের চলাফেরা, পোষাক পরিচ্ছেদ, কথা বলার ভঙ্গি এমনকি খ্যাদাভাসেও। মাঝে মাঝে তাদেরকে যৌনহয়রানি পর্যন্ত করা যন
এই বিষয়টির জন্য আসলে গবেষণার খুব একটা প্রয়োজন হয়না, আমরা আমাদের আশেপাশে হরহামেশাই এসব ক্ষমতার অপব্যবহারের উদাহরণ দেখতে পাই। একজন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে একজন পিয়ন পর্যন্ত এই নীচ কাজে জড়িত। এটা মানুষের এক ধরণের মানসিক ব্যাধি।

  • আমাদের সুখী হবার জন্য শুধু একটি জিনিসের প্রয়োজন।

জীবনে সুখী হবার জন্য আমরা কত কি না করি! টাকা কামাই, বাড়ি বানাই, গাড়ি কিনি। অনেকে আবার মোটিভেশনাল স্পীকারদের দরজায় নিয়মিত কড়া নাড়ি! কিন্তু আমরা কি কখনোই জানতে চেয়েছি কোথায় আমাদের প্রকৃত সুখ! সুখী হবার জন্য বেশি কিছু না, মাত্র একটি জিনিষের খুব প্রয়োজন। আর মনোবিজ্ঞান গবেষকরা ভালবাসা নামক অনুভূতিটিকেই সেই একটি জিনিস হিসেবে অ্যাখায়িত করেছেন। জীবনে কিছুই দরকার নেই। যদি আপনার জীবনে ভালবাসা থাকে, তবে জীবনে আপনাকে বারবার ওয়েলকাম!

You don't need Lots of things to be happy.

৭৫ বছর ধরে হার্ভাডের গ্রান্ট গবেষণাটি পরিচালিত হয়ে আছে। এটি পৃথিবীর অন্যতম দীর্ঘতম মনোবিজ্ঞান গবেষণা। ১৯৩৮-১৯৩৯ সালের হার্ভাডের পুরুষ গ্রাজুয়েটদের নিয়ে এটি শুরু হয়েছিলো (নব্বইয়ের দশকে এটি আরো জোরদার হয়েছিল)। এই গবেষণাটি গ্র্যাজুয়েটদের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়মিত সংগ্রহ করে।

নিশ্চয় জানতে ইচ্ছে করছে গবেষণার ফলাফল কি! এতদিনের মনোবিজ্ঞানের উপর করা বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল বলে যে, আপনি যখন দীর্ঘমেয়াদী সুখ এবং জীবনে কি পেলেন আর কি হারালেন তার হিসেব কষবেন, তখন  ভালবাসাই সব বিষয়ের প্রকৃত সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

গবেষণার দীর্ঘমেয়াদী পরিচালক মনোবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ জর্জ ভ্যালেন্ট বলেন, সুখের দুটি স্তম্ভ আছে: একটি হলো  ভালোবাসা এবং অন্যটি জীবনের সাথে লড়াই করার উপায় খুঁজে বের করা। আর এই লড়াই করার উপায় এমন ভাবে খুঁজে নিতে হবে যেন সেটা ভালোবাসাকে জীবন থেকে দূরে সরিয়ে না দিতে পারে।

যারা একা থাকে তারা নিজেদের সুখী ভাবতে পারেন না, আবার একটা বয়সের পর একা থাকা মানুষগুলো শারীরিক, মানসিক অসুস্থতা যে অনেকের সাথে থাকে তার চেয়ে বেশি হয়।


THE END 


Credit By :  Biggan Bangla


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

বেশি বার পড়া হয়েছে

একজন রিক্সা-ওয়ালা