সফলতা
“সফলতা” একটি বহু আকাঙ্ক্ষিত শব্দ । কে না চায় সফল হতে ?
কিন্তু সবাই কি সফল হতে পারে ? অল্প কিছু সংখ্যক মানুষের কাছে ধরা দেয় সাফল্য নামের
সোনার হরিণ । সফলরা তাদের পরিশ্রম , দক্ষতা , প্রতিভা ও উত্তম অভ্যাসের গুনে সফল হন
। আসুন জানা যাক কি সেই গুনাগুণ , যার বলে মানুষ সফল হয় ।
বিখ্যাত লেখক হাল এলরোড ( Hal Elrod ) তার ‘The Miracle
Morning’ বইতে সফলতার জন্য সকালের ৬ টি অভ্যাস রপ্ত করার জন্য বলেছেন ।
Silence/
নীরাবতা পালন করাঃ
সকালে উঠেই দিনের কাজ-কর্ম নিয়ে ব্যস্ত
না পরে কিছুটা সময় নীরাবতা পালন করে , প্রার্থনা করলে আমাদের ব্রেনের নিউরন সারাদিন
কাজের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় ।
Affermation/
নিশ্চয়বোধক কথা বলাঃ
“আমি আজ সারাদিন এই কাজ গুলো করব , আমার
পক্ষে এই কাজ গুলো করা সম্ভব” এই ধরনের ইতিবাচক আত্মবিশ্বাসী কথাবার্তা নিজের সঙ্গে
নিজে বলতে পারলে , দিনের রুটিন কাজগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করা যায় । ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি
ড. এ.পি.জে আবুল কালাম বলেছেন সকালে উঠে নিজেকে পাঁচটি কথা বলুন “ I am the best ;
Today is my day ; I am a winner ; God is always with me ; I can do it .” ‘Positive
Attitude And Constructive Mindest ‘ , সারাদিনের কাজগুলোকে সফল ভাবে সম্পন্ন করতে
সাহায্য করে ।
Visualization
/ দিনের কাজগুলোকে মানসপটে কল্পনা করাঃ
দিনের সম্পাদিত্য কাজগুলোকে
যদি মনে মনে সাজিয়ে নেওয়া যায় তবে তা সময় মত সম্পন্ন করা সম্ভব । অনেক সময়ই আমরা অনেক
কাজ করার পরিকল্পনা করি , কিন্তু সময়মত শেষ করতে পারি না । Visualization আমাদের দিনের
কাজগুলোর সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করে তা যথাসময়ে সম্পন্ন করতে প্রভুতো সহযোগিতা করতে থাকে
।
সফলতা |
Exercise
/ শারীরিক কসরত করাঃ
সকালে উঠে পর্যাপ্ত ব্যায়াম করলে আমাদের
ব্রেন প্রচুর অক্সিজেন সাপ্লাই পায় । ফলে ব্রেন সারাদিন কাজ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে
যায় । ব্যায়াম শরীরের অঙ্গ – প্রত্যঙ্গ গুলোকে কাজ করার জন্য সক্রিয় করে তোলে এবং ব্রেনে
এন্ডোরফিন বা সুখী হরমোন নির্গত করে । যার ফলে চিন্তাশক্তি বেড়ে যায় , যা আমাদের সারাদিন
কাজ করার প্রেরণা যোগায় ।
Writing
/ লেখাঃ
সারাদিনের কাজগুলোর পরিকল্পনা ছক মনে মনে এঁকে
ফেলতে হবে । তারপর কাজগুলোকে গুরুত্বানুসারে লিখে ফেললে , তা করা সহজ হয়ে যায় । কথায়
বলে , “ Get the thing’s Measured , Get the thing’s done “ অর্থাৎ কোন কাজকে পরিমাপ
করা গেলে , অনেকটাই করা হয়ে যায় । “To Do “ লিস্ট তৈরি করা এবং লিস্টের করনীয় কাজগুলোতে
মাঝে মাঝে চোখ বালালে , তা পরিকল্পনামতে সঠিক সময়ে সম্পন্ন করা সম্ভব । বলা হয় “
Well begun is half done “ অর্থাৎ দিন্টা ভালোমতো শুরু করা মানে দিনের কাজগুলোর অর্ধেক
সম্পন্ন হয়ে যাওয়া ।
Reading
/ পড়াঃ
সকালে ঘুম থেকে উঠেই পড়ার অভ্যাস করলে সতেজ ব্রেনে অনেক
কিছু পাড়া যায় এবং পড়া বিষয়গুলো সহজে বুঝা ও মনে রাখা যায় ।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পরের দিনের কার্যক্রমের পরিকল্পনা
তৈরি করে লিখে ফেলতে হবে । এতে করে মন উক্ত কাজগুলি করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে ।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে নিজেকে প্রশ্ন ক্রা যেতে পারে , সারাদিন কী করলাম ? কীভাবে
কাজগুলো ভালো ভাবে করা যেত ? কী কাজ করা বাকী রয়ে গেল ? সেই অনুযায়ী পরবর্তী দিনের
পরিকল্পনা করা গেলে তা বাস্তবসম্মত হবে এবং সফলভাবে সম্পন্ন করা যাবে । সারাদিনের ০৩
টি প্রাপ্তির জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে আমাদের মাঝে কৃতজ্ঞতাবোধ
জন্ম নেয় , তা আমাদের পরবর্তী সারাদিন ভালো কাজ করার প্রেরণা যোগায় ।
আমাদের স্বল্পমেয়াদি , মধ্যমেয়াদি , দীরঘমেয়াদি টার্গেটগুলোকে
বার বার পর্যালোচনা করা দরকার । প্রয়োজন হলে তা সংশোধন , সংযোজন ও বিয়োজন করে সময়োপযোগী
করে নিতে হবে । আমাদের টার্গেট হতে হবে ‘ SMART ‘ যার পূর্ণরূপ হলোঃ “SPECIFIC ,
MEASURABLE , ATTAINABLE , RELEVANT & TIME-BASED “ .
যথাসময়ে কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারলে , আমাদের এক একটি দিন
সাফল্যমন্ডিত হয় । আর প্রত্যেক দিনের স্বার্থকতা আমাদের জীবনে সফলতা বয়ে আনে ।
Credit By :
উপ-পুলিশ কমিশনার (পিওএম)
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ , রাজশাহী
0 মন্তব্যসমূহ